Labels

Main Tags

জুই ও পলাশের প্রেমের গল্প পর্ব ২ – ভালোবাসার লড়াই ও ফিরে আসার কাহিনি

জুই ও পলাশের প্রেমের গল্প পর্ব ২ – ভালোবাসার লড়াই ও ফিরে আসার কাহিনি




পলাশের হাতে একটা চিঠি।
অভিমান জমা মেঘের মতো ঘন হয়ে আছে বুকের মধ্যে। চিঠির কাগজটা একটু মোটা, সুগন্ধি, ঠিক যেমন জুই সবসময় ব্যবহার করত। বাইরে তখন বিকেলের শেষ আলো। ছায়ারা বড় হয়ে যাচ্ছে। তার চোখের সামনে ছোট ছোট অনেক স্মৃতি ভেসে উঠছে...


---




🌿 ১. ভালোবাসার প্রগাঢ়তা


স্কুলজীবনে পরিচয় হলেও কলেজে উঠে জুই ও পলাশের প্রেমটা অন্য রকম গভীর হয়ে উঠেছিল।
জুইয়ের চোখে একধরনের স্বপ্ন ছিল, আর পলাশ ছিল সেই স্বপ্নে আঁকা নায়ক।
তারা একসাথে পথ হাটতো, বৃষ্টিতে ভিজতো, লাইব্রেরির পেছনে বসে কবিতা পড়তো, মাঝে মাঝে একে অপরকে চিঠি দিত।

তাদের ভালোবাসা ছিল –
না বলা কথার, চুপি চুপি দেখা করার, ক্লাস ফাঁকি দিয়ে রিকশায় ঘুরে বেড়ানোর প্রেম।

কিন্তু প্রেম কখনো কখনো একা বাঁচতে পারে না—
তাকে দমিয়ে রাখতে চায় সমাজ, পরিবার, বাস্তবতা।


---




💔 ২. সেই ফোনকল


এক সন্ধ্যায় পলাশের মোবাইলে ফোন আসে—

> “পলাশ ভাই, আমি শাফি বলছি, জুই আপুর বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে।”



পলাশ কিছুক্ষণ স্তব্ধ।
তারপর মুঠোফোনটা গায়ের ওপর ছুড়ে ফেলে দেয়।

ঘরটা চারপাশ থেকে যেন ছোট হয়ে আসছে।
জুই…
যে বলত,

> “তুমি ছাড়া কাউকে ভাবতেও পারি না…”
সে এখন অন্য কারও কনের সাজে?





---

🕊️ ৩. বিশ্বাসের পিঠে ছুরি?


পরদিন সকালেই জুইকে ফোন করে পলাশ।
কিন্তু ফোন বন্ধ।

একটা দুটো দিন না—
৫ দিন কেটে যায়।
তাদের নিয়মিত কথা না হওয়াটা ছিল অসম্ভবের মতো।
এতদিন পরে হঠাৎ একদিন জুইয়ের নম্বর থেকে একটুকু মেসেজ:

> “পলাশ, প্লিজ ভুল বুঝো না… আমি কিছুই পারিনি… বিশ্বাস করো…”



পলাশ হতবাক।
কি মানে এই কথার?
সে কি জোর করে কিছু করতে বাধ্য হয়েছে?
বাড়ি থেকে জোর করে বিয়ে ঠিক করে দিয়েছে?


---

🧕 ৪. জুইয়ের দিনলিপি


জুইয়ের বাড়িতে তখন সাজ সাজ রব।
জুই জানে না সে কীভাবে পলাশকে বলবে—
তার বাবা-মা তাকে হঠাৎ করেই দূর সম্পর্কের এক প্রবাসী পাত্রের সঙ্গে বিয়েতে রাজি করিয়ে ফেলেছে।

> “তোর বয়স হয়েছে জুই, এবার সংসার শুরু কর। ও ছেলে ভালো, আমেরিকা থাকে।”



জুই কাঁদতে কাঁদতে মা'কে জড়িয়ে ধরেছিল,

> “মা, আমি তো ভালোবাসি… প্লিজ… বাবা যেন না বোঝে...”



কিন্তু জুইয়ের চোখের পানি বাবা-মায়ের কাছে ছিল দায়িত্বে ব্যর্থতা।
তাদের সমাজে ‘ভালোবাসা’ বলতে কিছু নেই, আছে সম্মান, বংশ, পয়সা।







---

📩 ৫. পলাশের চিঠি

জুই যখন কিছুতেই যোগাযোগ করতে পারছিল না,
পলাশ তখন গোপনে একখানা চিঠি লিখে পাঠায়—

> "জুই,
আমি জানি তুমি বাধ্য হয়েছো।
কিন্তু জানবে, আমার ভালোবাসা জেলখানার মতো না—
সেটা মুক্ত আকাশ। তুমি যদি বলো, আমি লড়ব…
নয়তো চুপ করে হারিয়ে যাবো।"



জুই সেই চিঠি হাতে পেয়ে রাতভর কাঁদে।
সে জানে— সে পলাশকে ভালোবাসে।
আর সে এটাও জানে, সমাজ তাকে এই ভালোবাসা করতে দেবে না।


---

💼 ৬. পলাশের নতুন শুরু

প্রেমে ব্যথা পেয়েই হয়তো মানুষ গড়ে ওঠে।

পলাশ নিজের জেদে ভর্তি হয় ঢাকার একটি প্রাইভেট ভার্সিটিতে।
স্কলারশিপ পায়, পার্টটাইম জব নেয়।
প্রেম ভুলে নয়—
প্রেমকে প্রমাণ করার জন্য।

সে ঠিক করে—

> “আমি এমন এক অবস্থানে যাবো, যেখানে দাঁড়িয়ে বলতে পারি—জুই, এখন আমি তোমার যোগ্য!”




---

🕰️ ৭. তিন বছর পরে...

সময় পার হয়ে গেছে প্রায় তিন বছর।
জুইয়ের সেই বিয়েটা শেষমেশ হয়নি—
পাত্রের পরিবার শেষ মুহূর্তে দাবি করে বিশাল পরিমাণ টাকা।
জুইয়ের বাবা সরে যায়।
জুই তখন সিদ্ধান্ত নেয়—

> “আমি আর কাউকে বিয়ে করবো না। যদি বাঁচি, তবে একাই বাঁচবো।”



তবে এই তিন বছরে জুই ও পলাশ একে অপরকে কখনো ভুলতে পারেনি।


---

💬 ৮. সেই পুরনো নাম্বার...

একদিন হঠাৎ পলাশের ফোনে একটা মেসেজ:

> “চেনা লাগে?”

018******




পলাশ চমকে উঠে।
তার হৃদয় লাফিয়ে উঠে।

> “জুই… তুমি?”
“হ্যাঁ পলাশ, এখনও ভুলোনি আমাকে?”




---

🌌 ৯. নতুন স্বপ্ন


পলাশ এখন কিছুটা স্ট্যাবল।
নিজস্ব একটা স্টার্টআপ চালায়।
জুই এখন নিজের স্কুলে শিক্ষকতা করছে।

তারা আবার ধীরে ধীরে যোগাযোগ শুরু করে,
কিন্তু সমাজ এখনও ঠিক হয়নি।
তাদের প্রেমে এখনও বাঁধা—বয়স, অবস্থা, পরিচয়, পুরনো ব্যথা।

তবুও...

পলাশ জুইকে বলে—

> “তুমি যদি বলো, আমি আবার বাবার কাছে যাবো।
এবার আমি শুধু প্রেমিক না—পুরুষ হয়ে এসেছি।”



জুই মাথা নিচু করে বলে—

> “এই সমাজের বাঁধা ভাঙতে হলে, আমাকে তোমার স্ত্রী নয়, প্রথমে তোমার যোদ্ধা বানাও।”







---

☁️ ১০. শেষ দৃশ্য – নাকি শুরু?

পলাশ ও জুই বসে আছে পুরনো সেই পার্কে।
আকাশে বৃষ্টি জমে আছে।

পলাশ বলে,

> “জুই, তুমি কি আমাকে এবার সত্যিই চাও?”



জুই ধীরে করে পলাশের হাত ধরে—

> “ভালোবাসি তো সেই ক্লাস নাইনের দিন থেকে... শুধু সাহস পাচ্ছিলাম না। এখন সাহসও তোমার মাঝে পেয়েছি।”



বৃষ্টি নামে…
তারা দু’জন ভিজে যায়—কিন্তু কোনো ছায়া নেয় না।

ভিজতে ভিজতে পলাশ বলে—

> “তোমার জন্য পৃথিবী ভিজলেও চলবে…”




---

🔚 শেষ নয়…


এই পর্বে ভালোবাসা যেমন গভীর হয়েছে, তেমনি বেড়েছে দূরত্ব ও সংগ্রাম।

তাদের প্রেমের পথে আগামী পর্বে আসবে আরও বড়ো বাঁধা—
সমাজের চোখ রাঙানি, বাস্তবতার ঠোক্কর, আত্মীয়দের কুটচাল।

তবে তাদের হৃদয়ে এখন ভালোবাসার সঙ্গে যোগ হয়েছে সাহস।



আপনার মতামত দিন:
“জুই ও পলাশের প্রেমের এই পর্বে কোন অংশটি আপনার হৃদয়ে সবচেয়ে বেশি নাড়া দিয়েছে? নিচে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না!”

❤️ শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন এই অনন্য প্রেমগল্প – একজনের ভালোবাসা আরেকজনকে সাহস দিতে পারে।




---

📌 পরবর্তী পর্বে (পর্ব-৩) থাকছে:


জুই ও পলাশের পরিবারে মুখোমুখি দ্বন্দ্ব

এক নাটকীয় বিয়ের প্রস্তাব

পলাশের সাহসী সিদ্ধান্ত

এবং… এক আবেগতাড়িত পালানো রাত!