Labels

Main Tags

লিজা ও সুমনের প্রেমের গল্প — পর্ব-৪

✨ লেখক: মুহাম্মদ খায়রুল ইসলাম
📞 যোগাযোগ: +৮৮০১৫১৮৯৬৫৯৩৬




সম্মানিত পাঠক, 
আপনাদের এ বিষয়ে কোনো প্রকার সাড়া না পাওয়াতে আমরা আমাদের এই লিজা ও সুমনের প্রেমের গল্পের ৪র্থ পর্ব দিয়ে দিলাম। আমাদের ইচ্ছা ছিলো এটি অনেক বড়ো আকারে প্রকাশ করবো, কিন্তু আপনারা কোনো প্রকার সাড়া না দেওয়াতে আমরা এটি আর একটি পর্বতে শেষ করে দিবো। আজ ৪নাম্বার পর্ব দিলাম কাল এটির ৫নাম্বার পর্বতে আমরা এটি শেষ করে দিবো। এর পরে আরেকটি গল্প শুরু করবো যদি আপনারা রেসপন্স দেন তাহলে সেটি অনেক বড়ো আকারে প্রকাশ করবো ইনশাআল্লাহ। 
এর পরের টা কাকে নিয়ে লিখবো আপনারা জানাতে পারেন। আপনাদের প্রিয়জনকে নিয়েও আমরা লিখতে পারি। যদি চান তাহলে আমাকে কল বা মেসেজ দিয়ে জানাতে পারেন আপনাদের বিষয়টি এর পর আমরা লিখবো আপনাদের নিয়ে।

🌸 শুরুটা যেখানে থেমেছিল

ভালোবাসার পথে কখনও কখনও যে বাধা আসে, তা মানুষের সাহসকে মাটি করে দেয়। লিজা আর সুমনের গল্পটাও ঠিক সেই জায়গায় এসে পৌঁছেছে। আগের পর্বে আমরা দেখেছি, কীভাবে দুজনের প্রেম এগিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সময় যত এগিয়েছে, ততই বেড়েছে সমাজের বাধা, পরিবারের চাহিদা আর বাস্তবতার কঠিন পরিস্থিতি।

সেই প্রেমের গল্প আজ আরও গভীর জায়গায় যাবে, যেখানে থাকবে কষ্ট, থাকবে নতুন করে নিজের জায়গা দাঁড় করানোর লড়াই, আর থাকবে অজানা ভবিষ্যতের অপেক্ষা।





---

🕰️ পুরনো স্মৃতি — যেখানে শুরু হয়েছিল পথচলা

সুমন, গ্রামের সাধারণ পরিবারের ছেলে। শহরের একটা কলেজে পড়ে, স্বপ্ন দেখে একদিন বড় হবে, মায়ের মুখে হাসি ফুটাবে। লিজা, শহরের মেয়ে, আধুনিক, স্মার্ট, মায়াবী চোখে স্বপ্নের ঝিলিক।

ওদের পরিচয় হয় ফেসবুকে। চ্যাট, মেসেজ, ভিডিও কল — এইভাবেই দুজন দুজনার কাছে আসা শুরু। কথা বলতে বলতে কখন যে মন থেকে ভালোবাসা তৈরি হলো, কেউ বুঝতেই পারল না।

প্রথম দেখা হয়েছিল ঢাকা শহরের সেই ছোট্ট কফি শপে।
লিজার লাল কুর্তি, সুমনের সাধারণ শার্ট আর টেনশন ভর্তি চোখ।
তবে দেখা হওয়ার পর, দুই হৃদয়ের মধ্যে এক অদ্ভুত অনুভূতি। মনে হয়েছিল, যেন দুজন বহু জন্মের পরিচিত।


---

💌 প্রেম যখন বাস্তবতার সামনে

প্রথম দেখা থেকে শুরু করে দুজনের সম্পর্ক গভীর হতে থাকল।
সকাল, দুপুর, রাত — মেসেজ, কল, দেখা করা — এমনকি একসাথে রিকশা ভ্রমণ, সিনেমা হল, পার্কে ঘোরাঘুরি — যেন জীবনটাই পাল্টে গেল।

কিন্তু সুখের পেছনে লুকিয়ে থাকে কঠিন বাস্তবতা।
লিজার পরিবার জানলে ভেঙে পড়বে সব।
আর সুমনেরও ছিল ভয় — সমাজ, আত্মীয়স্বজন, অর্থনৈতিক অবস্থা সবই বিপক্ষে।

তারপরও ওরা স্বপ্ন দেখত — একসাথে থাকার, জীবন সাজানোর।

📝 ফোনের আলাপে পরিকল্পনা

প্রায়ই রাতের বেলা ফোনে কথা হত —
"তুই ভয় পাচ্ছিস?" — সুমনের প্রশ্ন।
"ভয় পাই, কিন্তু তোর উপর বিশ্বাস আছে" — লিজার উত্তর।
"তুই থাকলে আমি সব লড়াই করব" — সুমনের আত্মবিশ্বাস।

এইভাবে চলছিল ওদের প্রেমের দিনরাত্রি।


---

🌧️ কালবৈশাখীর রাতে এক ভিন্ন অনুভূতি

একদিন কলেজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে হঠাৎ আকাশ কালো করে আসে।
ঝড়, বৃষ্টি শুরু হয়।
লিজা ভয় পেয়ে যায়।
সুমন তার হাত ধরে দোকানের নিচে দাঁড়ায়।

তখনই সুমন বলল —
"লিজা, যতোই ঝড় আসুক, আমি তোর হাত ছেড়ে যাব না।"

লিজার চোখ ভিজে আসে —
"তুই আমার সাথে থাকলে আমি ভয় পাব না।"

সেই ঝড়ের রাতে, দুজনের ভালোবাসা আরও দৃঢ় হলো।
কিন্তু কে জানত, সত্যিকারের ঝড় তখনও আসেনি।




---

🏡 পরিবারের বাধা — যুদ্ধের শুরু

সময় যত গেল, ততই বাড়ল ঝামেলা।
লিজার বড় ভাই ফেসবুকে কিছু সন্দেহজনক পোস্ট দেখে ফেলে।
তদন্ত শুরু হয়।
একদিন হঠাৎ লিজার ফোন কেড়ে নেয় পরিবার।
সব মেসেজ, ছবি, কললিস্ট দেখে সবাই নিশ্চিত হয় — লিজা প্রেম করছে।

পরিবারে শুরু হয় অশান্তি।
লিজাকে আটকে ফেলা হয়, ফোন নিষিদ্ধ, কলেজে যাওয়া কমিয়ে দেওয়া হয়।

সুমনও জানতে পারে সবকিছু।
কিছুদিন কোনো যোগাযোগ হয় না।
সুমনের চোখে জল, বুকের ভিতর পাথরের মতো ভার।


---

🌙 লুকিয়ে মেসেজ — সাহস ফিরে পাওয়া

তিনদিন পর, এক পুরনো বন্ধুর মাধ্যমে লিজা মেসেজ পাঠায় —
"আমি ঠিক আছি, ভেঙে পড়িস না। আমি তোকে ছাড়া বাঁচতে পারব না। অপেক্ষা কর।"

সুমনের বুক ভরে ওঠে সাহসে।
ভালোবাসা এমনই — হাজার কষ্টেও হাল ছাড়ে না।


---

⏳ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বড় সিদ্ধান্ত

ওরা প্ল্যান করে — পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করবে।
সুমনের বন্ধুরা পাশে থাকে, সাহায্য করে।
লিজারও কয়েকজন ঘনিষ্ঠ বান্ধবী পরিকল্পনায় যুক্ত হয়।

১৪ ফেব্রুয়ারি, ভালোবাসা দিবসকে ঠিক করে ওরা পালানোর জন্য।
টিকিট, ব্যাগ, সব প্রস্তুত।

কিন্তু ভাগ্যের খেলা ছিল অন্যরকম।


---

☎️ এক ফোন কল — বদলে দেয় গল্প

১৩ তারিখ রাত।
সব কিছু প্রস্তুত।
হঠাৎ সুমনের ফোন বেজে ওঠে।
অজানা নম্বর, ওপাশে কান্নার আওয়াজ —

"সুমন ভাইয়া, লিজা হারিয়ে গেছে!"

সুমনের শরীর ঠাণ্ডা হয়ে যায়।
কিছু বুঝে ওঠার আগেই, ওপাশের কণ্ঠ বলে —

"সে বাসা থেকে বের হয়েছে, তারপর আর ফেরেনি। ফোনও বন্ধ। সবাই পাগলের মতো খুঁজছে।"

সুমনের মন অজানা শঙ্কায় ভরে ওঠে।
তারপর থেকে শুরু হয় খোঁজাখুঁজি, অনিশ্চয়তা, আর হাজার প্রশ্ন।


---

🏃 খোঁজার যুদ্ধ — দিন রাতের তীব্র চেষ্টা

পরদিন ভোর থেকে সুমন, তার বন্ধুরা শহর, হাসপাতাল, বন্ধুবান্ধব, পার্ক — যেখানে সম্ভব, খুঁজতে থাকে।
লিজার পরিবারও থানায় জিডি করে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি পোস্ট হয় — "হারানো মেয়ে"র খোঁজে।

সুমনের মন ভিতর থেকে ভেঙে যায়।
ভালোবাসার মানুষ এভাবে হারিয়ে গেলে কীভাবে বাঁচে কেউ?


---

🌌 ৩ দিন পর অজানা ঠিকানা থেকে ফোন

তৃতীয় দিন রাতে সুমনের ফোন বেজে ওঠে।
অপরিচিত নম্বর, ধোঁয়াটে কণ্ঠ —

"আমি লিজা। ভালো আছি। আমাকে খুঁজিস না।"

সুমনের গলা শুকিয়ে যায় —
"তুই কোথায়?"

লিজার কান্নাভেজা কণ্ঠ —
"আমার পরিবার যা করেছে, আমি আর কিছুতেই ফিরব না। তুই নিজের ভবিষ্যত নিয়ে ভাব।"

ফোন কেটে যায়।
সুমনের মন ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়।







---

🕯️ প্রেমের পথের শেষ মোড় — কী হবে পরিণতি?

কয়েকদিন কেটে যায়।
লিজার কোনো খোঁজ নেই।
সুমন চেষ্টা করে, বন্ধুদের মাধ্যমে খোঁজ নেয়।
কেউ কেউ বলে — লিজা অন্য শহরে আত্মীয়ের বাসায় আছে।
কেউ বলে — পরিবারের চাপে সে আত্মগোপনে।

সুমনের মন থেকে লিজার ছবি মুছে যায় না।
দিন যায়, মাস যায়, কিন্তু ভালোবাসা থেকে যায়।


---

🌺 প্রেম, বিরহ, আর ভবিষ্যতের অপেক্ষা

এভাবেই লিজা হারিয়ে যায় সুমনের জীবন থেকে।
কিন্তু হারিয়ে যায় না ভালোবাসার স্মৃতি।
সেই নদীর পাড়ে হাঁটার স্মৃতি, হাত ধরে বলা কথা, চোখের ভাষা — সবই থেকে যায়।

সুমন নিজের জীবন সামলে নেয়।
পড়াশোনা, চাকরির প্রস্তুতি।
কিন্তু মনের গভীরে একটা আশা — হয়তো কোনো একদিন আবার দেখা হবে, অন্যরকম পরিবেশে, অন্যরকম পরিস্থিতিতে।

আপনার মতামত আমাদের জানাতে পারেন কমেন্ট করে কল দিয়ে বা আমাদের মেসেজ দিয়ে। আপনাদের সুশাস্থ কামনা করি ভালো থাকবেন আমাদের পাশে থাকবেন।

www.sunnahlife24.blogspot.com